সাঁতরে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেওয়া এখনও মানুষের পক্ষে অসম্ভবই রয়েগেছে। আর এই অসম্ভবটিই সম্ভব করার পাগলাটে জেদ নিয়ে জাপান থেকে সাঁতরে আমেরিকার পূর্ব উপকূলের পথে যাত্রা শুরু করলেন এক ফরাসি সাঁতারু। এ কাজে সফল হলে তিনিই হবেন প্রশান্ত মহাসাগর সাঁতরে পাড় করা বিশ্বের প্রথম মানব।
৫১ বছর বয়সী ওই সাঁতারুর নাম বেন লেকোম্তে। মহাসাগর পাড়ি দিতে দিনে ৮ ঘণ্টা করে সাঁতরে অতিক্রম করবেন তিনি। বাকিটা সময় সাহায্যকারী নৌকায় বিশ্রাম নেবেন, খাবেন, ঘুমোবেন। পরদিন আবার ঝাঁপ দেবেন পানিতে।
কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটলে এভাবে সাঁতরে জাপান থেকে আমেরিকার পূর্ব উপকূলে পৌঁছতে তার সময় লাগবে ছয় মাসেরও বেশি। তবে প্রায় নয় হাজার কিলোমিটারের এ যাত্রাপথে লেকোম্তের জন্য অপেক্ষায় হাজারও বিপদ। যেকোনো মুহূর্তে হাজির হতে পারে হাঙর, পথরোধ করে ফেলতে পারে জেলিফিশের ঝাঁক, দেখা দিতে পারে ঝড়-তুফান। এছাড়াও প্রশান্ত মহাসাগরের হাড়কাপানো ঠাণ্ডা পানিতো আছেই।
লেকোম্তে আশা করছেন, তার এ উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। যাত্রাপথে তার সঙ্গে থাকবেন একদল বিজ্ঞানী। এসময় তারা সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা চালাবেন।
এদিকে মহাসাগর পাড়ি সফল করার জন্য গত ছয় বছর ধরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বসবাসকারী লেকোম্তে। পানিতে সাঁতরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করেছেন প্রতিদিন। মানসিক প্রস্তুতি হিসেবেও নিতে হয়েছে বিশেষ ট্রেনিং।
সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লেকোম্তে বলেন, সাঁতরে মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার জন্য শারীরিক প্রস্তুতির থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক প্রস্তুতি। এসময় কোনোভাবেই আপনার মনে নেতিবাচক ভাবনা ঢুকতে দেওয়া চলবে না। আর সবসময়ই ভালো কিছু ভাবতে হবে। কারণ, যখনই আপনার মনে কোনো ভাবনা জন্মাবে না, ঠিকই তখনই এলোমেলো হওয়া শুরু করবে মাথা!
১৯৯৮ সালে লেকোম্তে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেন। ৭৩ দিনে ৬৪০০ কিলোমিটার সাঁতরে ফ্রান্সের উপকূলে পৌঁছানোর পর বলেছিলেন,এ ধরনের পাগলামি(!) দ্বিতীয়বার করতে রাজি নন তিনি।
কিন্তু চার কিংবা পাঁচ মাস পরই নিজের পরবর্তী অ্যাডভেঞ্চারের বিষয়বস্তু ঠিক করে ফেলেন লেকোম্তে। এবার প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেওয়া চাই তার।