মাথার কাছে মোবাইল ফোনটা চালু রেখে কখনও ঘুমাতে যাবেন না। জরুরি এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ, ফোন কল আসার যতই সম্ভাবনা থাকুক না কেন দিনে, রাতে যখনই ঘুমাতে যাবেন মোবাইলটা হয় বিছানা থেকে বেশ কিছুটা দূরে রাখবেন বা সেটা বন্ধ করে রাখবেন।
চালু মোবাইলের ওয়াইফাই বিকিরণ ভয়ঙ্কর ক্ষতি করে দেবে আমাদের। সম্প্রতি উত্তর জাটল্যান্ডের নবম শ্রেণির একদল ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন রকমের শাকের বীজ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছে চালু মোবাইলের ওয়াইফাই বিকিরণ প্রাণের পক্ষে চরম ক্ষতিকারক। তা মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। পরীক্ষার ফলাফলে যথেষ্টই উৎসাহিত ইংল্যান্ড, হল্যান্ড ও সুইডেনের গবেষকরা।
মোবাইলের অ্যালার্ম ব্যবহার বন্ধ :
একেবারেই ঠিক শুনেছেন। এ কথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে যখন অ্যালার্ম সেট করার পর থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা তা অফ করছি ফোন থেকে “রেডিও ট্রান্সমিশন” হতে থাকে। সহজ কথায় মোবাইলের শরীর থেকে অদৃশ্য তরঙ্গ বেরতে থাকে যার প্রভাবে শরীর এবং মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এবার ভাবুন তো ফোনটা মাথার কাছে রেখে শুলে কী হতে পারে।
ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বাড়ছে:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে মাথার কাছে ফোন রেখে শুলে শরীরে রেডিয়েশনের প্রভাবে কোষেদের বিকাশে বাঁধার সৃষ্টি হয়। ফলে নানাবিধ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু বছর আগে একদল অষ্ট্রেলিয়ান গবেষক এই বিষয়ে একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে শরীরের কাছাকাছি বেশি সময় মোবাইল ফোন রাখলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পরার মতো কমে যায়। ফলে বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
ফোনের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে বাঁচতে আরও কিছু উপায়:
◘ দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না। এক নাগাড়ে পনের মিনিটের বেশি কথা বলা কোনভাবেই উচিৎ নয়।
◘ দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে কথা বলতে চাইলে স্পিকারে বা হেডফোনে কথা বলুন। আপনার সেটটি শরীর থেকে দুই-তিন ইঞ্চি দূরে রেখে কথা বলুন। বাসায় বা অফিসে যদি ল্যান্ডফোন থাকে তাহলে ল্যান্ডলাইনে কথা বলুন, তবে হ্যান্ডসেটে (তার বিহীন) নয়।
◘ যখন মোবাইল ফোনের সিগন্যাল দুর্বল থাকবে বা ব্যাটারির চার্জ কম থাকবে তখন মোবাইল ব্যবহারে বিরত থাকুন।
◘ প্যান্টের পকেটে অথবা বুক পকেটে ভুলেও ফোন রাখবেন না। এতে শরীরের একাধিক অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। পকেট বা শরীরের সংস্পর্শে মোবাইল ফোন না রেখে ব্যাগে রাখুন।
◘ যানবাহন (কার, বাস, ট্রেন, প্লেন) এবং লিফটে মোবাইল ফোন ব্যবহারে বিরত থাকুন। কারণ ধাতব বস্তুর নিকটবর্তী থাকলে রেডিয়েশনের মাত্রা বেড়ে যায়।
◘ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন দিবেন না। বিশেষ করে যাদের বয়স আঠারো বছরের কম।
◘ মাথার পাশে মোবাইল রেখে ঘুমাবেন না। কমপক্ষে কয়েকফুট দূরে রাখুন। যদি ফোনে এলার্ম সেট করতে চান এয়ারপ্লেন মুডে রাখুন।
◘ ল্যাপটপ বা ট্যাবে কাজ করার সময় টেবিলে বসে করুন। কোলে বা বুকের ওপর কখনো রাখবেন না।
◘ মোবাইল ফোন চার্জে থাকা অবস্থায় কখনো ব্যবহার করবেন না।
◘ ওয়াইফাই রাউটার আপনার বেডরুম বা যে রুমে আপনি বেশীরভাগ সময় কাটান তা থেকে দূরে রাখুন এবং রাতের বেলায় বন্ধ রাখুন।
◘ অন্ধকারে মোবাইল, ল্যাপটপ ব্যবহারে বিরত থাকুন। কারণ অন্ধকারে মনিটর থেকে যে রশ্মি নির্গত হয় তা আমাদের চোখের জন্য ক্ষতিকর।
◘ যদি মোবাইলে কোন ভিডিও বা মুভি দেখতে বা গান শুনতে চান তাহলে আগে ডাউনলোড করে নিন। পরে এয়ারপ্লেন মুডে উপভোগ করুন।
◘ শিশুরা যদি মোবাইল বা ল্যাপটপে গেম খেলতে চায় তাহলে এয়ারপ্লেন মুডে সেট করে দিন।