গ্রামীণ টাইমস: রাজশাহীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বেতনের জন্য আবারও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরকে ফোন করা হচ্ছে বলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে দুই মাসের (মার্চ-এপ্রিল) বেতন পরিশোধের জন্যও ফোনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানটি থেকে। রাজশাহীর কোচিং বাণিজ্যকারী এ প্রতিষ্ঠানটি কোচিং সেন্টার থেকে পরবর্তী সময়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজে রূপান্তরিত হয়।
এদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্কে লকডাউনে থাকা অধিকাংশ মধ্যবিত্ত ও গরিব শ্রেণির মানুষ যখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, ঠিক তখনই সন্তানের বেতনের জন্য স্কুল থেকে ফোন দিয়ে চাপাচাপি করায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে অভিভাবকদের মাঝে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও প্রতিষ্ঠানটির এমন আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করেছে। একটি ফেসবুক পেজে এ নিয়ে অন্তত ৩০০ অভিভাবক এ ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৪ মে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের পর ‘রাজশাহীতে সেশন ফি নিয়ে বিপাকে দুই লাখ শিক্ষার্থী’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর রাজশাহী কলেজের হোস্টেল ফি মওকুফ করেন অধ্যক্ষ। কিন্তু এখনো মেস ভাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাসিক বেতন ও সেশন ফির জন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কাছে বারবার ফোন করা হচ্ছে।
জাহিদ রহমান নামের একজন এনজিওকর্মী বলেন, ‘অফিস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আমাদের বেতন বন্ধ হয়ে আছে। এই অবস্থায় সংসার চালানোয় দায় হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে স্কুল থেকে বেতনের জন্য ফোন করে চাপাচাপি করা হচ্ছে। এই অবস্থায় সংসার চালাব নাকি সন্তানের স্কুলের বেতন দিব?’
মতিউর রহমান মণ্টু গত শুক্রবার একটি ফেসবুক পেজে লেখেন, বন্ধ স্কুলে ফোন করে দুই মাসের পুরো বেতন একসঙ্গে চাওয়া হচ্ছে। বিষয়টা অভিভাবকদের জন্য বিব্রতকর! গত দুই মাস ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বন্ধ রয়েছে। সেখানে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা চাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা ভাববার বিষয়। গত জানুয়ারিতে সব স্কুলে ভর্তিতে সেশন ফির নামে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছে। তারপর মাত্র তিন মাস স্কুল চলার পরই বন্ধ হয়েছে। পরবর্তীতে কবে স্কুল খুলবে সেটাও অনিশ্চিত। সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের বেতনের ভাবনা আসে কোথা থেকে? অপরদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে স্কুলের অন্যান্য খরচও তেমন লাগেনি। বিদ্যুৎ, পানি, চক, ডাস্টার কিংবা কাগজ-কলমে কোনো খরচ হয়নি। সেখানে পুরো বেতনের প্রসঙ্গ আসে কিভাবে? বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষসহ সবার ভাববার বিষয়।
জানতে চাইলে রাজশাহী শিমুল মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের সঙ্গে বারবার এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানের নম্বরে ফোন করা হলে পরিচয় না দিয়ে একজন বলেন, ‘এ বিষয়ে চেয়ারম্যান স্যারই ভালো বলতে পারবেন। আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
–এমএসআইএস